Friday, March 25, 2011

ফতোয়া চাওয়া, দেয়া এবং অনুসরণ করা

বস্তুত ফতোয়া চাওয়া একটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। কারণ যার বিধান জানা নেই এবং এরূপ জ্ঞানও নেই যে নিজে ঘাঁটাঘাঁটি করে বিধানটি জেনে নেবে, তাকে ঈমানের পথে চলতে হলে জিজ্ঞাসা করে জেনে নেয়ার কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন— ‘জ্ঞানীজনদের জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও যদি তোমরা না জান’ (সূরা নহল : ৪৩, আয়াত-৭)।
আল্লামা আবু বকর জাযায়েরি (রহ.) আইসারুত তাফসিরে সূরা আম্বিয়ার ৭নং আয়াতের আলোচনায় উল্লেখ করেছেন—“এই আয়াতের দ্বারা প্রমাণিত হয় যে সাধারণ মানুষের জন্য ওলামা ও (মুফতিদের) অনুসরণ করা ওয়াজিব। কেননা তারাই ‘আহলুয যিকির’ বা জ্ঞানীজন এবং তারা যে ফতোয়া দেন তদানুসারে আমল করাও ওয়াজিব” (আইসারুত তাফসির : খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩৯৮)।
সুতরাং এই আয়াতের দ্বারা ফতোয়া চাওয়া এবং প্রদত্ত ফতোয়া মেনে চলা যে ওয়াজিব তা পরিষ্কার বোঝা যায়। আর আয়াতের ভাবার্থ থেকে এ কথাও বোধগম্য হয় যে, যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে তাকে অবশ্যই জানা থাকলে ফতোয়া দিতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন—‘যদি কোনো ব্যক্তিকে এমন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, যা সে জানে তথাপি সে তা বলে না, তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে আগুনের লাগাম লাগানো হবে’ (মুসনাদে আহমদ, সহিহ ইবনে হিব্বান)। ইমাম আবু বকর আল জাসসাস (রহ.) এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে ‘আল ফুসুল ফিল উসুল’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন—‘যারা জানে না তাদের আল্লাহ নবউদ্ভূত দ্বীনি বিষয়ে আহলে ইলমদের কথা মেনে চলতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর প্রথম যুগ থেকে অর্থাত্ সাহাবিদের যুগ থেকে অদ্যাবধি উম্মত এই পন্থাই অনুসরণ করে আসছে যে সাধারণ মানুষ তাদের দ্বীনি বিষয়ে ওলামারই শরণাপন্ন হয়ে থাকে। (আল ফুসুল ফিল উসুল : খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-২৮১)। ষ
লেখক : আবুল ফাতাহ্ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া,

গবেষক ও সিনিয়র মুহাদ্দিস, মালিবাগ জামিয়া, ঢাকা

No comments:

Post a Comment